সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ঢাকা টু বেতুয়া নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ কর্ণফুলী-১৩ স্টাফদের যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন এক কিশোরী যাত্রী।নদীতে ঝাপ দেয়ার পর লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কিশোরীকে নদী থেকে উদ্ধার না করে ঢাকায় চলে যায়। পরে মাছ ধরার ট্রলারের মাঝিরা কিশোরীকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই কিশোরী তজুমদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি কিশোরী বলেন, উপজেলার বিচ্ছিন্ন তেলিয়ার চরের মোঃ কবিরের কিশোরী কন্যা (১৪) কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তজুমদ্দিন স্লুইজঘাট থেকে কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চে উঠেন। লঞ্চে উঠার পর লঞ্চের স্টাফরা ওই কিশোরীকে বিভিন্ন কুপ্রস্তাবের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে কিশোরীকে তাদের সাথে কেবিনে রাত্রি যাপন করতে টানাটানি করলে ইজ্জত রক্ষার্থে সে নদীতে ঝাপ দেন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করতে একটি বয়া ফেললেও পানির স্রোতে বয়া ধরতে পারেনি কিশোরী। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধারে অন্যকোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান লঞ্চটি। নদীতে ঝাপ দেয়ার প্রায় ৩ ঘন্টা পর জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে কিশোরী তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
জানতে চাইলে কিশোরীকে উদ্ধার করা নৌকার জেলে রায়হান বলেন, সন্ধ্যার সময় আমার নদীতে মাছ ধরার জন্য নৌকা প্রস্তুত করছিলাম হঠাৎ নদীর মাঝে একজন লোক বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার দিতে শুনে আমার তাকে উদ্ধার করে দেখি মেয়েটিকে। পরে তাকে মিজান তালুকদারসহ অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চের সুপারভাইজার মোঃ রুবেল বলেন, আমি লঞ্চের উপরে ছিলাম পরে শুনছি লঞ্চ থেকে একজন মহিলা পানিতে লাফ দিয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য আমরা একটি বয়া ফেলছি সে বয়া ধরতে পারেনি। আমরা ঢাকায় চলে যাই পরে কি হয়েছে জানি না।
হাসপাতালে থাকা তজুমদ্দিন থানার এসআই মোঃ শামীম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরীর সাথে কথা হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল বলেন, রোগীর ভাষ্যমতে তাকে লঞ্চের স্টাফরা অনৈতিক প্রস্তাব দিলে সে নদীতে ঝাপ দেয়ার সময় ডান হাতে আঘাত পায়। জেলেরা নদী থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনলে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো রয়েছে।
এ বিষয়ে তজুমউদ্দিন থানার ওসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে। এর আগেও গত মঙ্গলবার (৩০ ই জুন) বোরহানউদ্দিনের হাকিমউদ্দিন ঘাটেএকই কোম্পানির কর্নফুলী-১২ লঞ্চ ও ফারহান-৫ লঞ্চ দু’টি একই সময়ে ঘাটে নোঙোর করে। কর্ণফুলীর স্টাফ ডাকে ৩০০ টাকা ভাড়া ও ফরহান লঞ্চের স্টাফ ডাকে ১০০ টাকায় ঢাকা যাওয়া যাবে বলে দুই পক্ষ হাঁকডাক শুরু করে।
কর্নফুলী লঞ্চ স্টাফরা হঠাৎ করেই ক্ষেপে গিয়ে লাঠি-সোটা নিয়ে টার্মিনালে থাকা ফারহান লঞ্চের স্টাফ সহ ঘাটের লোকজনের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাঁরা এলোপাথারি মারতে থাকে ফলে যাত্রী, স্থানীয়, ঘাটশ্রমিক সহ ১২ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটানাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
Leave a Reply